তিমি শিকারের স্টেশন আর সৃষ্টিকর্তা
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের দক্ষিণ উপকূলে ইডেন নামের একটি শহরে তিমির মৃতদেহ প্রক্রিয়াজাতকরণের একটি পুরোনো স্থান রয়েছে।
স্থানটি প্রক্রিয়াজাতকরণে আর ব্যবহৃত না হওয়ার কারণে তাকে এখন একটি তিমি জাদুঘরে রুপান্তর করা হয়েছে। সেখানে গেলে আপনি তিমি শিকারিদের সাথে এক শিকারি তিমির বিশেষ সম্পর্কের কথা কাহিনি পড়বেন।
তিমিরা যখন পাশ দিয়ে সাঁতার কাটত তখন শিকারি তিমিটি তাদের তীরে নিয়ে যেত, তারপর সে তীরের কাছাকাছি দৌড়ে গিয়ে লাফালাফি করে তিমি শিকারিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা করতো।
এতে শিকারি বুঝতে পারতো যে সমুদ্রের কোথাও তিমি এসেছে। তখন তারা তাড়াহুড়া করে তাদের লম্বা উন্মুক্ত তিমি শিকারি নৌকায় ঝাঁপিয়ে পড়ত আর একটি দড়ি পানিতে ছুড়ে মারত।
তারপর শিকারি তিমিটি তার দাঁতের মধ্যে দড়িটি নিয়ে জমায়েত হওয়া তিমিদের মাঝে টেনে নিয়ে যেত। তিমি শিকারিরা তখন তাদের দড়ি-বাঁধা বর্শা বা হারপুন বের করে তিমিরগুলির দিকে ছুঁড়ে মারত।
ছিটরে রক্ত বের হত তাদের শরীর থেকে, আর বর্শার আঘাতে যন্ত্রণার তীব্রতায় তারা দিগ্বিদিক ছুটাছুটি আর প্রতিবাদ করে ধরাশায়ী হয়ে পড়ত ও মারা যেত। এরপর শিকারিরা তাদের টেনে টেনে নৌকায় তুলে তীরে নিয়ে আসত। আর পুরস্কার হিসেবে শিকারি তিমিটি কয়েক টুকরো তিমির মাংস ছুড়ে মারা হতো।
সেই সময় থেকে তিমি শিকারের প্রতি মানুষের মনোভাবের নাটকী পরিবর্তিত ঘটেছে, সম্ভবত আরও বেশি পরিবর্তন ঘটছে বাইবেলের একটি লাইনের কারণে।
কি লেখা আছে সেই লাইনটিতে? দাউদের যবুর শরীফ বা গীতসংহিতা ১০৪ অধ্যায়ের ২৬ পদ বা আয়াতে তিমি প্রাণীর কথা বর্ণনা রয়েছে, যেখানে বলেন যে ঈশ্বর লেভিয়াথান বা তিমিকে সমুদ্রে উল্লাস করা ব্যতীত অন্য কোনও কারণে সৃষ্টি করেননি, যেন তারা তাদের দিনগুলি পৃথিবীর মহাসাগরে খেলা করার ঘের হিসেবে কাটাতে পারে।
তিমিরা মানুষের মঙ্গলের জন্য বেঁচে থাকে তা নয়, বরং তারা ঈশ্বরের আনন্দের জন্য, সমুদ্রে খেলা করার জন্য বেঁচে থাকে যা ঈশ্বরের সৃজনশীল শক্তির একটি আনন্দদায়ক সম্মাননা বা উদ্যাপন।
এ মনোভাব আমাদের পুরোপুরি পরিবেশের উপর আমরা কি পেতে পারি এমন আধিপত্যের দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে নিয়ে যায়। যা আমাদের উপলব্ধি কথায় যে ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টিতে আনন্দ করেন, ঈশ্বর জগতের প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করেন।
আর তাই গীতসংহিতার অধ্যায়টি ৩১ পদে শেষ হয় তাঁর সৃষ্টির প্রতি ঈশ্বরকে আনন্দ করার আহ্বান জানিয়ে।
সূত্র: ইডেন তিমির মৃতদেহ প্রক্রিয়াজাতকরণের ওয়েবসাইট থেকে। ইংরেজি থেকে অনুবাদ।